সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুখ-শান্তির প্যাঁচ


আপনি হয়তোবা ভাবছেন, আপনার পাশের লোকটি কতই না সুখ-শান্তিতে আছে। কিন্তু, ঐ ব্যক্তিই জানে সে কতটা কষ্ট আর অশান্তি নিয়ে জগতে বাস করছে। আমরা আসলে অন্যকে নিয়ে কাল্পনিক চিন্তা-ভাবনা করতে, বেশি ভাবতে পছন্দ করি; আর অন্যের দুঃখ-কষ্টকে তুচ্ছ করে দেখি। এটা ঐ কাল্পনিক সুখ অনুভবেরই অংশ। যা আসলে বাস্তবে পাওয়া যায় না। সম্ভবত, অন্যকে ভেবে কাল্পনিক সুখ অনুভব বাঙালিপনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাঙালির রক্তে-মাংসে মিশে আছে মিথ্যে সুখ অনুভবের কেচ্ছা। চিরাচরিত ব্যাপার। জগতের সব মানুষ ভালো আছে; আমি যে ভালো নেই, এটা বাস্তবে হোক আর কথাচ্ছলে হোক বুঝাতে হবেই। অনুভূতি এতই প্রবল যে পান থেকে চুন খসলেই সব শেষ, এমন একটা ভাব নিয়ে চলে।

জীবন মানেই দুঃখ-কষ্ট এবং সমস্যা। আর সমাধান করে এগিয়ে যাওয়ার নাম মানুষ। প্রাণ থাকলে প্রাণী; সাথে বিদ্যা-বুদ্ধি-জ্ঞান-প্রজ্ঞা থাকলে হয় মানুষ। এগুলো মানুষকে প্রাণীর কাতার থেকে প্রকৃত মানুষে রূপান্তরিত করে। আমার পিতামহ বলতেন, "ভালমন্দ মিলিয়েই মানুষ। এর ব্যত্যয় ঘটবে না। দুটোই সব মানুষের জীবনে থাকবে।"

একবার ভেবে দেখুন তো, আপনার কি কি আছে। যেটা অন্যদের থেকে আপনাকে আলাদা করে; আপনার স্বাতন্ত্র্যতা ও স্বকীয়তা বজায় রাখে। যেগুলোর কারনে আপনি ভালো আছেন; টিকে আছেন। আপনার যা আছে; তা তাদের নেই। আপনার যা আছে, তা নিয়ে খুশি থাকুন। থাকতে শিখুন। অন্যদের কথা ভেবে নিজের মনে কষ্ট দেয়া, চুড়ান্ত বোকামি।

আবার আরেকপক্ষ এতটাই অহমিকা নিয়ে চলে যে পৃথিবীর সব জ্ঞান-বিদ্যা-বুদ্ধি-আত্মসম্মান-সম্পদ-গরিমা মনে হয় আল্লাহ তাকেই দিয়েছে। বাকি সবাই নস্যি! এরা সমাজের নাম করা ভাড়; নিজেরাই জানে না। অজান্তেই মানুষকে বিনোদন দিয়ে বেড়ায়। আত্মপক্ষ সমর্থন এতটাই প্রবল যে হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়ে গেছে। এটা ভুলে যায় যে বর্তমানে কেউ কাউকে সে অর্থে মেনে-গুনে চলে না। বেশিরভাগই প্রবল আত্মপক্ষ সমর্থন নিয়ে চলে। বোকাকান্ত!

ভালো থাকার সবচেয়ে সহজবোধ্য উপায় হচ্ছে, মূর্খতা ও অসভ্যতা এড়িয়ে চলা। আমাকে একজন প্রশ্ন করেছিল যে ভাই ভালো থাকার সহজ উপায় কি? এটা তার প্রত্যুক্তি ছিল।

আমি আসলে লেখাগুলো লিখে থাকি; ব্যক্তি মানুষ, সমাজ, রাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বহুবিধ বিষয় পর্যবেক্ষণ করে। বলতে পারেন চুড়ান্ত পর্যবেক্ষণশীল লোক। লেখার পূর্বে উপাদানগুলো এমনভাবে পর্যবেক্ষণ করি যেন খুব বেশি অপর্যবেক্ষণশীল তথ্য লেখার মধ্যে ঢুকে না যায়। লেখার ঢং মূলত সার্বিক। একক না। এজন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে গুলিয়ে ফেললে ভুল করবেন। লেখাগুলো মূলত ব্যক্তি মানুষের চিন্তার খোরাক জোগাতে সহায়ক হতে পারে বলে বোধ করি। যাহোক, সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি।